সম্প্রতি নিউট্রিনো কণা নিয়ে এত হৈচৈ হয়ে গেল! তো আজকে আমরা এই
নিউট্রিনো কণা নিয়ে একটু আলোচনা করি নাকি? চলুন তাহলে শুরু করা যাক-
পদার্থবিদরা ঠাট্টা করে নিউট্রিনো কণাকে বলেন, ভুতুড়ে কণা ! কেন এরকম
অদ্ভুত নাম ? হয়তো এর চেয়ে জুৎসই আর কোন নাম খুঁজে পাননি তাঁরা ,
তাই এই অদ্ভুত নামকরণ ! নিউট্রিনো ছুটছে প্রায় আলোর বেগে । প্রতিমুহূর্তে
আমাদের দেহ ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে , তবুও আমরা কিছু টের পাই না
কারণ এই কণা দেহের অনু-পরমানুর সঙ্গে কোন বিক্রিয়া করে না। না হলে
নিউট্রিনো তীরে বিদ্ধ হয়ে পৃথিবীতে টিকে থাকতো না কোন প্রাণী । শুধু প্রাণী নয়,
এই কণা ভেদ করে চলে যাচ্ছে ,ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত , এমনকি এই পৃথিবী, সৌরজগৎ এবং নক্ষত্রমণ্ডলও । অথচ কথাও রেখে যাচ্ছে না চিহ্নমাত্র ।
নিউট্রিনো হল, একটি ইলেকট্রিক্যালি নিরপেক্ষ, ক্ষুদ্র এবং শূন্যের কাছাকাছি
“ ভরযুক্ত ” মৌলিক সাব-এ্যাটমিক পার্টিক্যাল,যা অন্যান্য ম্যাটারের সাথে কোন
রকমের ইন্টারেক্ট করে না বললেই চলে ।
সূর্যের মধ্যে কিংবা নিউক্লিয়ার রিয়েক্টারে বা কসমিক রে যখন অ্যাটমকে আঘাত
করে, তখন এক বিশেষ ধরনের নিউক্লিয়ার রিএ্যাকশানের কারণে এই পার্টিক্যালটি
তৈরি হয় । এটা ইলেকট্রিক্যালি নিরপেক্ষ হওয়ার কারণে কনোরকমের আক্রান্ত
হওয়া ছাড়াই সাধারণ ম্যাটারের ভিতর দিয়ে চলে যেতে পারে ।
বিখ্যাত ভারতীয় পদার্থ বিজ্ঞানী এনাক্কাল চণ্ডী জর্জ ( ই.সি.জি ) সুদর্শন বহুকাল
ধরে বলে আসছেন আলোর চেয়ে দ্রুততর কণার অস্তিত্বের কথা । কিন্তু তা এতকাল
তাত্ত্বিক সম্ভাবনা হিসেবেই গণ্য হয়ে এসেছে । নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী উল্ফগাং পাউলি ১৯৩০ সালে প্রথমে এই মৌলিক সাব-এ্যাটমিক পার্টিক্যালটির ব্যাপারে ধারণা দেন ।
সম্প্রতি ইউরোপের বিজ্ঞানীরা এক পরীক্ষার পর বলছেন, নিউট্রিনো কণার গতি,
আলোর গতির চেয়ে বেশি ! বিশ্লেষকরা বলছেন, আবিষ্কার যদি শেষ পর্যন্ত
নির্ভুল প্রমাণিত হয় তাহলে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সূত্র অনুযায়ী
অনেক অসম্ভব “ হয়ত ” সম্ভব হবে , এবং উদঘাটন করা যাবে আধুনিক
পদার্থ বিদ্যার অনেক রহস্যের ।