সূর্য্যের আলো কাজে লাগিয়েই উত্পাদন হয় সৌরবিদ্যুৎ। তবে সৌরবিদ্যুৎ উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান টরসল এমন এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে যার সাহায্যে দিনে তো বটেই রাতেও বিদ্যুৎ উত্পাদন করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে ১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত সূর্য্যের তাপ ধরে রাখা সম্ভব, যা দিয়ে রাতের বেলায়ও টারবাইনগুলোকে সচল রাখা যাবে। জার্মাসোলার নামে এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্পেনের সেভিলের কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত। টরসলের এতে ব্যয় হয়েছে ২৬ কোটি পাউন্ড।
সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের টাওয়ারটিতে ২ হাজার ৬০০ আয়না বসানো আছে। আয়নাগুলোর সাহায্যে সংগৃহীত তাপ লবণের দুটি ট্যাংকে পাঠিয়ে দেয়া হবে। প্রায় ৯০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে লবণ গলতে থাকবে এবং এর চারপাশের ফুটন্ত পানি টারবাইনগুলোকে চালাবে। আর এসবই ঘটবে সূর্য্যের আলো ছাড়াই।
প্লান্টটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টরসলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুটি গরম ট্যাংকে লবণ জমিয়ে রাখা হবে, যা তাপ সংরক্ষণ করবে। যখন সূর্য্যের আলো থাকবে না, তখন সংরক্ষিত এই তাপ বিদ্যুৎ উত্পাদন করবে। কোম্পানির প্রকৌশলী এনরিক সেন্ডাগোর্টা বলেন, ‘আমরা বৈশ্বিক কোম্পানিতে পরিণত হতে চাই। সেভিলের এই প্রকল্পটি তার শুরু মাত্র। প্লান্টটি এখনো পূর্ণক্ষমতায় উত্পাদন শুরু করতে পারেনি। তবে আগামী বছর নাগাদ উত্পাদনক্ষমতার ৭০ শতাংশ কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, সেভিলের পরিবেশ সৌরবিদ্যুতের জন্য খুবই উপযোগী, বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে যা নেই।
জার্মাসোলার সৌরবিদ্যুৎ প্লান্টটিতে উত্পাদন শুরু হয় গত মে মাসে। তবে আফ্রিকায় এর চেয়ে বড় আকারের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা যায় কিনা সে নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে টরসল।
এদিকে টরসলের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। হাউ টু স্টপ ক্লাইমেট চেঞ্জ গ্রন্থের লেখক ক্রিস হ্যাসলাম বলেন, অন্ধকারেও সৌরবিদ্যুৎ উত্পাদনের এই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন। ভবিষ্যতে এটি প্রথাগত বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।
সূত্র: হাফিংটন পোস্ট