বিজ্ঞানীরা নতুন এক প্রকার ক্যামেরা আবিষ্কার করেছেন, যার দ্বারা কারো দেহের ভেতরের রক্ত চলাচলের গতি-প্রকৃতি বাইরে থেকেই স্পষ্ট দেখা যাবে। বিশেষত কারো শরীর আগুনে বা রাসায়নিকে পুড়ে গেলে এই ক্যামেরা দিয়ে বাইরে থেকেই ওই ক্ষতস্থানের ভেতরের অবস্থা কেমন, তা বুঝতে পারবেন চিকিৎসকরা। আর সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিয়ে পোড়া দেহ সঠিকভাবে সারিয়ে তোলা সহজ হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।‘লেজার ড্রপলার ইমেজিং’ নামের এ ক্যামেরা তৈরি করেছে সুইজারল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অ্যামএগো।
সুইজারল্যান্ডের লোজানে বার্ন স্পেশালিস্ট অ্যান্ড রিকনস্ট্রাক্টিভ সার্জন অ্যাট সিএইচইউভি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে এ ক্যামেরার দ্বারা পরীক্ষামূলক চিকিৎসা চালানো হয়েছে। গত বুধবার নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত ১৪তম ইউরোপীয়ান বার্নস অ্যাসোসিয়েশন কংগ্রেসে এ ক্যামেরা দ্বারা পরীক্ষামূলক চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
এ ক্যামেরা ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথমে পুড়ে যাওয়া ব্যক্তির দেহের নরম কোনো অংশে ক্যামেরার ডিভাইসটি বসাতে হবে। আর ক্যামেরাটি এমনভাবে বসাতে হবে, যাতে ক্ষতস্থানের দিকে এর মুখ থাকে। ক্যামেরাটির সঙ্গে তারের সংযোগ দিয়ে অন্য প্রান্ত থেকে চিকিৎসক ভিডিও পর্দায় দেখবেন রোগীর রক্তের রঙের তারতম্য, ঘনত্ব ও গতিপ্রবাহ কেমন দৃশ্যমান হয়। প্রতি সেকেন্ডে ক্যামেরাটি অন্তত ১২টি চিত্র ভিডিও স্ক্রিনে পাঠিয়ে থাকে।
অ্যামএগোর মিশেল ফ্রেডরিক বলেন, কারো দেহে ক্যামেরা লাগানোর পর ভিডিও চিত্রে যদি লাল রঙের উপস্থিতি দেখা যায়, তখন বুঝতে হবে রক্ত অধিক গতিতে চলছে, আর নীল দেখা গেলে বুঝতে হবে গতি প্রবাহ কম। তিনি আরো বলেন, কোনো টিস্যু বা কোষ যদি রক্ত সঞ্চালন না করে তাহলে ক্ষতস্থান সেরে উঠবে না। যদি কোনো কোষ মরে গিয়ে থাকে, তাহলে শরীরের অন্য অংশ থেকে চামড়া বা মাংস কেটে ক্ষতস্থানে সংযোজন করতে হবে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, মারাত্মকভাবে পুড়ে যাওয়া দেহ সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে এ ক্যামেরা বেশ ভূমিকা রাখবে। মানুষের হৃদযন্ত্রের চিকিৎসায় এ ক্যামেরা বেশ কাজে আসবে বলেও মনে করছেন তাঁরা। সূত্র : বিসিসি অনলাইন।