অনেকেই মনে করেন, হ্যানরি ফোর্ড মোটরগাড়ির উদ্ভাবক। আসল বিষয়টি তা নয়। ফোর্ড সর্বপ্রথম গাড়ি বাজারজাতকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন। কিন্তু মোটরগাড়ি প্রথম উদ্ভাবন করেন কার্ল বেঞ্জ। ১৮৮৫ সালে তাঁর তৈরি প্রথম গাড়িটি ছিল তিন চাকার। এর ইঞ্জিন চলত বাষ্পীয় গ্যাস দিয়ে। ১৮৮৮ সালে গাড়িটি বিক্রি করার ঘোষণা দেন বেঞ্জ। কিন্তু কেউ ভরসা পেল না। বিক্রি হলো না গাড়িটি। একদিন গভীর রাতে কার্ল যখন ঘুমিয়ে ছিলেন মিসেস বেঞ্জ এবং তাঁর দুই ছেলে গাড়িটি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। প্রায় ৬৫ মাইল তাঁরা এই তিন চাকার গাড়িতে ঘুরে বেড়ান। ঘটনাটি অনেকের চোখেই পড়ে। অনেকেই তখন এটি কেনার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠে।
১৮৯৩ সালে কার্ল তিন চাকার পরিবর্তে প্রথম চার চাকার গাড়ি তৈরি করেন। তিনি এর নাম দেন ‘দ্য বেঞ্জ ভিক্টোরিয়া’। পরে বিভিন্ন সংস্করণের মধ্য দিয়ে বেনজের তৈরি গাড়ি আধুনিক রূপে বাজারে আসে ‘মার্সিডিজ বেঞ্জ’ নামে।
বেঞ্জের তৈরি গাড়ির নামের সঙ্গে ‘মার্সিডিজ’ যুক্ত হওয়ারও ইতিহাস আছে। গাড়ি উদ্ভাবনের খবর যখন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলে দেয়, তখন অনেক দেশ থেকেই বেঞ্জের কাছে গাড়ির ফরমায়েশ আসতে থাকে। ১৯০০ সালে অস্ট্রেলীয় ব্যবসায়ী ইমিল জিলিনও বেশ কিছু গাড়ির অর্ডার করেন। কিন্তু ইমিল এমন ধরনের গাড়ি চাচ্ছিলেন, যেগুলো ডিজাইনে থাকবে ভিন্নতা এবং হতে হবে দ্রুতগতির। ইমিলের মেয়ের নাম ছিল মার্সিডিজ। তাই নতুন ডিজাইনের গাড়ির নামে ‘মার্সিডিজ’ যুক্ত করার আহ্বান জানান ইমিল। এ জন্য বেঞ্জকে প্রচুর অর্থ দেন ইমিল।
কার্ল বেঞ্জের জন্ম ১৮৪৪ সালে জার্মানিতে। তাঁর বাবা ছিলেন ইঞ্জিনচালক। তিনি কার্লস্রুহে কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
গাড়ি তৈরিতে ১৮৭৯ সালে তিনি প্রথম পেটেন্ট লাভ করেন। ১৮৮৩ সালে তিনি ‘বেঞ্জ’ প্রতিষ্ঠানটি দাঁড় করান।
১৯০৩ সালে বেঞ্জ অবসরে যান এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত থাকেন। ১৯২৯ সালের ৪ এপ্রিল মারা যান তিনি।