পৃথিবীতে সবচেয়ে ছোট স্বাধীন রাষ্ট্র ভ্যাটিকান সিটি। যার আয়তন মাত্র ০.৪৪ বর্গ কিলোমিটার। ভ্যাটিকান সিটির লোকসংখ্যা প্রায় ৯২০ জন। ইউরোপ মহাদেশের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র ইতালির রাজধানী রোমের পাশেই এই রাষ্ট্রের অবস্থান। ১৯২৯ সালের দিকে ইতালির ফ্যাসিবাদী সরকার প্রধান বিনেটো মুসোলিনির সময়ে পিটরো গ্যাসপারি নামক একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মুসোলিনির অনুমতি সাপেক্ষে ভ্যাটিক্যান সিটি প্রতিষ্ঠা করেন। রহস্যঘেরা এ ছোট্ট দেশটিকে নিয়ে লোকমুখে নানা কথা প্রচলিত আছে। ভ্যাটিকান সিটিটি সবসময় থাকে শান্ত_ এর চারপাশে বিরাজ করে সুনসান নীরবতা, দেশটিতে কোনো রমণী বসবাস করে না বলেই ধরে নেওয়া হয়। যারা ভ্যাটিকান সিটিতে বসবাস করে সবাই ক্যাথলিক পোপ। তারা সারা পৃথিবীতে খ্রিস্টধর্মের শান্তির বার্তা প্রচার করেন। প্রথম শতাব্দী থেকেই ভ্যাটিকান সিটিতে খ্রিস্টধর্মের সাধু বা পোপরা বসবাস শুরু করেন। তখন ভ্যাটিকান সিটি স্বাধীন-সার্বভৌম কোনো রাষ্ট্র ছিল না। শুধু ইতালির অধীনে ছোট শহর বলে পরিচিত ছিল। ১৯২৯ সালে ভ্যাটিকান স্বাধীনতা লাভ করলেও এখনো জাতিসংঘের সদস্য হতে পারেনি। সাধারণ জনগণ ইতালি ও ল্যাটিন উভয় ভাষাই ব্যবহার করে। দেশটির সাক্ষরতার হার ৯৯.২%। বার্ষিক গড় আয় ১৬০০ মার্কিন ডলার। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, ভ্যাটিকান সিটির যেসব নাগরিক বৃদ্ধ হয়ে যায় তাদের ইতালিতে প্রেরণ করা হয় বাকি জীবন অতিবাহিত করার জন্য। আর এতে বৃদ্ধদের পরিবর্তে আনা হয় তরুণ সাধু-সন্ন্যাসীদের। প্রথম শতক থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ পোপ এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। তবে অন্যান্য দেশের মতো এখানেও রয়েছে সরকার পদ্ধতি_ মন্ত্রী-এমপি, যারা সুন্দর ও সুচারুভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। ভ্যাটিকান সিটির চতুর্দিকে শুধু সবুজ আর সবুজ, নানা গাছ-গাছালিতে এই ছোট্ট রাষ্ট্রটি পরিবেষ্টিত। ভ্যাটিকান সিটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো সেনাবাহিনী নেই, তবে ইতালির সরকার এই দেশটিকে নিরাপত্তা বিধানের জন্য নিয়োগ করেছে কয়েকশ নিরাপত্তাকর্মী। পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিয়োজিত রয়েছে বিশ্বের অন্যতম নামকরা নিরাপত্তা প্রাতিষ্ঠান সুইজ গার্ড (Swiss Gurd) সাংবিধানিক নিময় অনুযায়ী পোপই রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তিনি সাংবিধানিক বিধি মোতাবেক রাষ্ট্রটি পরিচালনা করেন। সারা বিশ্বের অন্যতম পবিত্র স্থান বলে ঘোষিত ভ্যাটিকান সিটিকে ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব ঐতিহাসিক স্থান’ হিসেবে ঘোষণা করে_ বর্তমানে রাষ্ট্রটি খ্রিস্টান ধর্মের অন্যতম প্রধান স্থান হিসেবে বিবেচিত।
ভ্যাটিকান সিটি
বৈচিত্রময় বিশ্ব » আলোকবর্ষ » 5th December, 2011 » মন্তব্য করা হয়নি » »
567 বার দেখা হয়েছে
Print this post