পৃথিবীতে ডাইনোসরের উদ্ভব হয় ২৩০ মিলিয়ন বছর পূর্বে - প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light | প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light

পৃথিবীতে ডাইনোসরের উদ্ভব হয় ২৩০ মিলিয়ন বছর পূর্বে

Print this post

ডাইনোসর শব্দটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত।এক সময়ের পৃথিবীর সবচেয়ে বিশাল ও বিরাট আর শক্তিশালীএ জন্তুটি পৃথিবীতে বিচরণ করেছিল প্রায় ১৬০ মিলিয়ন বা ১৬০০০০০০০ বছর যাবত। পৃথিবীতে ডাইনোসরের উদ্ভব হয় ২৩০ মিলিয়ন বছর পূর্বে(ট্রিয়াসিক যুগ) আর ৬৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে(ক্রিটেশিয়াস-টারশীয়ারী যুগ) এর বেশীরভাগ প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে। আমরা বর্তমানে যে সকল পাখি দেখতে পাই, তাদেরকে ডাইনাসোরেরই কিছু প্রজাতির বিবর্তিত রূপ বলে ধারণা করা হয়। ডাইনোসরের যে সকল ফসিল বাজীবাশ্ম রয়েছে,তা থেকে বিশ্লেষিত তথ্য আমাদের এ ধারণাই দেয় যে,পাখি theropod ডাইনোসরেরই বিবর্তিত রূপ।
Denios অর্থ ভয়ঙ্কর আর Sauros অর্থ টিকটিকি। অর্থাৎ এর পুরো অর্থ ভয়ঙ্কর টিকটিকি।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, ডাইনোসর ছিলো মন্থর গতিসম্পন্ন, স্বল্পবুদ্ধি ও ঠান্ডা মেজাজের প্রাণী। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের ধারণার পরিবর্তন ঘটে।
ডাইনোসরদের বিভিন্ন প্রজাতি
এদের কিছু প্রজাতি ছিল মাংশাসী, কিছু ছিল তৃণভোজী, কিছু প্রজাতী দুপায়ে হাটতে পারত আবার কিছু প্রজাতি চারপায়ে হাটত। কোনোটি উচ্চতায় ছিল প্রায় ১০০ ফুট আবার কোনোটী ছিল মুরগীর সমান। এ পর্যন্ত ডাইনোসরের আবিষ্কৃত প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৫০০, তবে জীবাশ্ম রেকর্ডের ভিত্তিতে ১৮৫০ টি প্রজাতির সন্ধান পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাত এখনো প্রায় ৭৫% প্রজাতি আবিষ্কারের অপেক্ষায়।
অবশ্য এর পূর্ববর্তী এক গবেষণায় পৃথিবীতে ৩৪০০প্রজাতির ডাইনোসর ছিল বলে উল্লেখ করা হয় যার বেশীর ভাগেরই অস্তিত্ব বর্তমানে টিকে থাকা জীবাশ্মে নেই। ডাইনোসরের বিচরণ ছিল পৃথিবীর প্রতিটি মহাদেশে, এমনকি এন্টার্কটিকায়ও এর অস্তিত্বের প্রমান পাওয়া গেছে।
অনেক প্রজাতির ডাইনোসরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু নাম নিচে দেয়া হলো।
Saurischia: এসব ডাইনোসরের পম্চাত ছিল সরীসৃপদের মতো।
Theropods: এটি মাংসভোজি ডাইনোসরের দল।
Sauropods: এরা লতাপাতা খেয়ে বেঁচে থাকত। এদের ছিল খুব লম্বা লম্বা গলা।
Ornithischia: এরা লতাপাতা ভোজি যাদের কারো কারো পাখির মতো ঠোঁট ছিল।
Armoured dinosaurs: এদের পিঠে ছিল বড় বড় হাড় যা এদেরকে রক্ষা করত।
Ornithopoda: এরা “duck-billed” ডাইনোসর।
Pachycephalosauria: এসব ডাইনোসরের মাথা ছিলখুব শক্ত।

ডাইনোসর বলতে যে শুধু বিশালাকার দেহের জন্তু বোঝায় তা নয়,বরং খুবই ছোট আকারের ডাইনোসরও সেসময় ছিল। সবচেয়ে ছোট ডাইনোসর Anchiornis এর ওজন ছিল ১১০ গ্রাম।তৃনভোজী Microceratus এবং Wannanosaurus এর দৈর্ঘ্য ৬০ সেন্টিমিটার(২ ফুট) ।

ডাইনোসরদের বিলুপ্তির কারন

ডাইনোসরের বিলুপ্তির সঠিক কারণ এখনো পুরোপুরিভাবে জানতে পারা যায়নি। তবে অনেক বিজ্ঞানীই মনে করছেন কোনো বড় আকারের উল্কাপিন্ড পৃথিবীর উপর প্রবলভাবে আঘাত হানার ফলে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়। তাদের মতে,উল্কাটির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১৫ কিলোমিটার এবং এর আঘাত পারমাণবিক বোমার চেয়ে এক বিলিয়ণ গুণ বেশী শক্তিশালী ছিল।
তবে কেউ কেউ মনে করেন,উল্কার আঘাতে নয় বরং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুতপাতের ফলে ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটে ।
তাছাড়া খাদ্যাভাবকেও অনেকে একটি উল্লেখযোগ্য কারণ মনে করেন। সেসময় মাংশাসী ডাইনোসর তৃণভোজী ডাইনোসরদের খেয়ে ফেলত বিধায় এক সময় খাদ্যাভাব সংঘটিত হয় বলে অনেকের ধারণা।
তাপমাত্রার পরিবর্তনকেও উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যায়।অনেকের মতে সেসময় পৃথিবীব্যাপী তাপমাত্রার এক ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে যার সাথে অভিযোজিত হতে না পেরে অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়।
বিশালাকার ডাইনোসরেরা চলাফেরায় ধীর ও স্থবিরতার ফলে এবং নোংরা পরিবেশের কারণে তারা বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত রোগের শিকার হয় এবং এভাবে এক সময় বিলুপ্তির পথে অগ্রসর হয় বলে অনেকে মনে করেন।
তবে ডাইনোসরের বিলুপ্তিতে আরেকটি কারণকে প্রাধান্য দেয়া হয় তা হলো,তাদের ডিমের খোসারপুরুত্ব। পরীক্ষায় দেখা যায়,সাড়ে ছয় কোটি বছর আগের ডিমের খোসা ১২ থেকে ১৪ কোটি বছর আগের ডিমের খোসার চেয়ে যথেষ্ট পুরু ছিল। ফলে ডিমের খোসা ভেঙ্গে বেরিয়ে আসা বাচ্চা ডাইনোসরের পক্ষে কষ্টকর ব্যাপার ছিল।এর ফলে পরবর্তীতে ডাইনোসরের বিকলাংগতা দেখা দিত এবং প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেত। এভাবে এক সময় তারা বিলুপ্তির দিকে অগ্রসর হয়।

তথ্যসুত্র : জানা অজানার মহাবিশ্ব

You can leave a response, or trackback from your own site.