“‘ বিলিভ ইট ওর নট ।’ কথা সত্য !”-পর্ব 8 - প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light | প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light

“‘ বিলিভ ইট ওর নট ।’ কথা সত্য !”-পর্ব 8

Print this post

১.>*পাখিরা যতোই পরিশ্রম করুক না কেন তাদের কখনো ঘাম হয় না !

>* মাছেদের কখনো পানির পিপাসা পায় না ।

>*শকুন ঘন্টায় প্রায় ১০ মাইল উড়তে পারে ।

>*উট দিনে প্রায় ১০০ মাইলের মত হাঁটতে পারে ।

>*অনান্য কীটপতঙ্গের মতো প্রজাপতিদেরও বহু রকমের প্রজাতি আছে । বিজ্ঞানীরা বলেন পৃথিবীতে প্রায় এক লাখ রকমের প্রজাপতি আছে ।

>*অন্য প্রাণীরা স্বাদ গ্রহন করে জিভ দিয়ে ।কিন্তু প্রজাপতিরা কোন খাবারের স্বাদ গ্রহন করে পেছনের পা দিয় !

2.কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারেরো বহু বছর আগে ইনকা ( Incas ) নামে একটি সুসভ্য জাতি বাস করত দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন অংশে । আজকে যেসব অঞ্চল নিয়ে বলিভিয়া , পেরু , ইকুয়েডর , আর্জেন্টিনা এবং চিলি গড়ে উঠেছে এসব অঞ্চলেই আগে বাস করত ইনকারা । কলম্বাসের আমেরিকা আগমনের ৪০০ বছর আগে থেকেই তারা এখানে রাজত্ব করতে আসছিল । ইনকাদের রাজধানীর নাম ছিল কুজকো ( Cuzco ) । এটি ছিল তাদের পার্বত্য সূর্যনগরী । ইনকারা বিশ্বাস করত , তাদের সম্রাজ্যের রাজধানী কুজকোই হল পৃথিবীর কেন্দস্থল । এই শহরে বাণিজ্য করার জন্যই বহু দূর দূরান্তের দেশ থেকে জাহাজে বোঝাই করে আসত নানা রকম শস্য , সোনা , রূপা , কাপড় এবং কোকো পাতা । কুজকো ছিল সারা সম্রাজ্যের একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে । এই জন্যই হয়ত ইনকারা মনে করত কুজকো গোটা পৃথিবীরই কেন্দ্রবিন্দু । ইনকারা ছিল একটি সুশৃঙ্খল ও সুসভ্য জাতি । তাদের প্রত্যেক গোত্রের আচার অনুষ্ঠান মেনে চলার অধিকার ছিল ।ইনকাদের শাসনব্যবস্থার ভিত্তি ছিল একটি পরিবার । প্রতি ১০টি পরিবার নিয়ে গঠিত হত একটি দল । দলের থাকত একজন দলপতি । তেমনি ৫০টি পরিবার নিয়ে গঠিত হত একটি গোত্র । এমনি করে স্তরে স্তরে উঠে গেছে শাসন ব্যবস্থা । শীর্ষে আছেন রাজা । তিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী । প্রত্যেক ইনকাই ছিল কর্মঠ । নাবালক ছেলে এবং অতি বৃদ্ধ ছাড়া সবাই কাজ করে খেত । পরিবার পিছু চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমিজমা ছিল । তারা নিজেরাই খাবার জোগাত , পরনের কাপড় বুনত , জুতো তৈরি করত , তৈরি করতে ঘরের আসবাবপত্র এবং সোনা রূপার অলঙ্কার পর্যন্ত । ইনকাদের সমাজব্যবস্থা ছিল খুব কড়া । সমাজের কারো যা খুশি তা করার ক্ষমতা ছিল না । কে কোন কাপড় পড়বে , কোন ধরণের খাবার খাবে , কোন কাজ করবে , তা ঠিক করে দিত দলপতি বা সমাজপতিরা । সমাজে অসুস্থ গরিব এবং বৃদ্ধ লোকদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব ছিল সমাজপতির হাতে । সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হল ইনকাদের মধ্যে গরিব বলে কেউ ছিল না ! প্রত্যেকের ঘরে ছিল সোনা রূপার প্রচুর অলঙ্কার । ইনকা সম্রাজ্যে চিবচা নামে একটি হ্রদ ছিল । এই হ্রদে প্রতি বছর একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় একজন সমাজপতিকে সোনার গুঁড়ো গায়ে মাখিয়ে তাকে সূর্যদেবতা সাজিয়ে বিসর্জন দেয়া হত । এটা ছিল ওদের একটি বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান । বহু বছর সমৃদ্ধির সাথে রাজত্ব করার পর ইনকাদেয় রাজপরিবারে শুরু হয় দলাদলি । এতে ইনকা সম্রাজ্য ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সময় ইনকাদের সর্বশেষ সম্রাট আতাহুয়ালপাকে চরম বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে হত্যা করে স্পেনীয় সেনাপতি ফ্রান্সিসকো পিজারো । আতাহুয়ালপার বড় ভাই তখন রাজা ছিল । কিন্তু আতাহুয়ালপা সেটা মেনে নেয় নি । ওঁর বড় ভাই ওকে অর্ধেক সম্যাজ্য দিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু তাও সে তৃপ্ত না হওয়ায় সমস্ত সম্যাজ্যের রাজা হওয়ার জন্য ফ্রন্সিসকোর সাথে হাত মিলায় । কথা ছিল ফ্রন্সিসকো আতাহুয়ালপাকে সিংহাসনে বসাতে পারলে তাকে প্রচুর সোনা রূপা দেয়া হবে । যুদ্ধে আতাহুয়ালপা জিতে যায় কিন্তু ফ্রন্সিসকো তার ভাগের সোনা রূপা নিয়ে খুশি হতে পারে না । কারণ সম্যাজ্যে এত সোনাদানা দেখে তার মনে লোভ যাগে । কথিত আছে আতাহুয়াল তাকে একটি ছোট ঘরের সমান সম্পূর্ণ গলিত সোনা দিতে চেয়েছিল সাথে অন্য সোনার জিনিস তো বটেই ! কিন্তু লোভি ফ্রান্সিসকো ওঁকে হত্যা করে । স্পেনীয়রা তারপর ইনকা সম্যাজ্য অধিকার করে এবং তার যাবতীয় ঐশ্বর্য লুট করে ধ্বংস করে একটি প্রচীন সভ্যতাকে । স্পেনীয়দের অত্যাচারে রাজধানী শহর থেকে ইনকারা পালিয়ে যায় অন্যদিকে । পরিত্যক্ত ঘোষিত হয় ইনকা রাজধানী । তবে পালানোর আগে ইনকারা ওদের অধিকাংশ সোনা রূপার মুর্তি চামস হাঁড়ি কলসি আসবাব আরো অনেক কিছু যাতে স্পেনীয়দের হাতে না পড়ে তার জন্য সেরে রেখে যায় । আজ ও ওসব গুপ্ত ধন অধিকাংশ ই গুপ্ত আছে । কিন্তু তাও স্পেনীয়রা যা পায় তার অর্ধেক ও ওরা সারা জীবনে দেখেনি । এভাবেই এই মহান সভ্যতার শেষ হয় ।

You can leave a response, or trackback from your own site.