টম অ্যান্ড জেরি - প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light | প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light

টম অ্যান্ড জেরি

Print this post

টিভিতে টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন যখন দেখায় তখন আমাদের অনেকেরই কোনো হুশ থাকে না। নাওয়া-খাওয়া সব ভুলে বসে যাই কার্টুন দেখতে। কিন্তু আপনারা কি জানেন টম অ্যান্ড জেরি কার্টুনের জন্ম কিভাবে? কারাই বা এটা তৈরি করেছেন?

বড় একটা বিড়াল। ধূসর গায়ের রং, হলদেটে চোখের মণিতে ধূর্ত দৃষ্টি। আর ছোট্ট বাদামি একটা ইঁদুর, নিষ্পাপ চেহারা, দেখে বোঝার জো নেই যে মাথাভরা দুষ্টবুদ্ধি। একে-অপরকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে রান্নাঘরময়। ভেঙে চুরমার করছে বরফের বাক্স, আয়রন বোর্ড, প্লেট-কাপ-ডিশভর্তি গোটা একটা সিঙ্ক। মেঝে ভাসিয়ে দিচ্ছে ডিমের ভাঙা খোল, হলদেটে কুসুম দিয়ে।

এই বিড়ালটিই টম আর ইঁদুরটি জেরি।

প্রায় প্রতিটি পর্বেই দেথা যায় জেরিকে ধরতে টমের প্র্রানান্তকর চেষ্টা। অবশ্য টম কেন জেরিকে এত তারা করে তা পরিষ্কার নয়। নিচে এর কিছু কারণ দেখা যাক:

  • সাধারণ বংশগত ক্ষুধা
  • পোষকের মতানুসারে তার কর্তব্য (বাড়ির পোষা বিড়াল হিসেবে ইঁদুর ধরা টমের কাজ)
  • জেরিকে বিরক্ত করে মজা পাওয়া
  • প্রতিশোধ নেওয়া
  • টমের ভয়ংকর ও অসৎ পরিকল্পনা (যেমন হাঁস কিংবা মাছ রান্না করে খাওয়া) পণ্ড হলে
  • ভুল বোঝাবুঝি(সাধারণত এ ধরনের পর্বগুলো দু জনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থায় শুরু হয়)
  • সংঘর্ষ যখন দুজনে একই জিনিস চায় (সাধারণত খাবার)
  • জেরিকে সরিয়ে দেবার প্রয়োজন
  • দু’জনের কাছেই উপভোগ্য একটি খেলা

টম আর জেরির জন্ম হলিউডে। বিশ্বের কোটি কোটি দর্শককে হাসি-আনন্দে মাতিয়ে রাখছে এই জুটি। এ পর্যন্ত তাদের ঝুলিতে জমা হওয়া অস্কার যেকোনো চলচ্চিত্র তারকার মনে হিংসা জাগিয়ে তোলার জন্য যথেষ্ট। আর এতগুলো বছর পার হয়ে যাওয়ার পর এখনো টম অ্যান্ড জেরি লাখো-কোটি দর্শকের প্রিয় কার্টুন সিরিজ।

টম হিংস্র, সুযোগসন্ধানী, যার হাতে মতা আছে তার তোষামোদিতে ব্যস্ত। অপরদিকে জেরির মাথায় সবসময় খেলা করে কোনো না কোনো দুষ্টবুদ্ধি। এমনিতে হাসি-খুশি, তবে কোণঠাসা হয়ে পড়লে সময় সময় হিংস্র হয়ে ওঠে সেও ।

দুটি চরিত্রেরই মধ্যেই অন্যকে দুঃখ দিয়ে মজা পাবার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবুও টমের চরিত্র জেরির থেকে বেশী সচেতন দেথা যায়। জেরিকে খুব বেশী আঘাতপ্রাপ্ত, মরণাপন্ন বা মৃত মনে হলে টম খুব ভয় পেয়ে যায়। জেরি অবশ্য এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিতেও ছাড়েনা। মাঝে মাঝে টমকেও জয়ী দেখা যায় কিংবা উভয়কেই বোঝাপড়া করে নিতে দেখা যায়। তবে এ ধরনের পর্বগুলোতে আগেই কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমন যদি টম জেতে তবে:

  • জেরি অতিরিক্ত ঈর্ষায় কিছু করলে।
  • টমের কোন প্ররোচনা ছাড়াই জেরি সারা র্পব জুরে টমকে বিরক্ত করবে (উদাহরণ:একটি কার্টুনে জেরি নাম না জানা কোন বিড়ালকে নিয়ে

ঘুমন্ত টমকে এমনভাবে বিরক্ত করে যে টম ভাবে সে নিজেই নিজেকে ব্যথা দিচ্ছে। শেষে দেখা গেল তাদের দুজনকে খাঁচায় ভরে টম শান্তিতে বসে ঘুমাচ্ছে।)

  • সারা র্পব জুড়েই টম নিষ্ক্রিয় থাকবে

এই অসাধারণ জুটির রহস্য আবিষ্কার করতে আমাদের যেতে হবে তাদের যেখানে জন্ম সেই এমজিএম কোম্পানির প্রধান স্টুডিও ক্যালিফোর্নিয়ার কালভার সিটিতে। সেখানে অ্যানিমেশন ছবির নির্মাতা, লে-আউট শিল্পী, আঁকিয়ে, ক্যামেরাম্যান আর ছবি তৈরির বিভিন্ন যন্ত্রপাতিতে গাদাগাদি হয়ে আছে, ক্রিম রঙের একটা দোতলা বাড়ির একটার পর একটা কামরা। আর এখান থেকেই কোনো এক জাদুমন্দ্রের ছোঁয়ায় যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছিল টম আর জেরি।

টম আর জেরির জন্মদাতা পরিচালক উইলিয়াম হান্না ও জোসেফ বারবারা। দুজনই ত্রিশের দশকের শেষের দিকে কাজ করতেন এমজিএম স্টুডিওতে। বারবারা গল্প লেখেন আর চরিত্রগুলো দেখতে কেমন হবে তা ঠিক করেন। আর হান্না অভিজ্ঞ পরিচালক। জুটি বাঁধলেন তারা। তৈরি করলেন ‘পাস গেটস দা বুট’ নামের একটি বিড়াল-ইঁদুর কার্টুন, যা সিনেমা হলে মুক্তি পায় ১৯৪০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। তখন তো টেলিভিশন দেখার সুযোগ ছিল না। কার্টুন তৈরি হতো সিনেমা হলের জন্য। সেখানে বসেই ছেলে-বুড়ো সবাই মহানন্দে দেখত মজার সব কার্টুন।

একপর্যায়ে হল মালিকসহ অন্যদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই কার্টুন। এটা দেখে দারুণ এক বুদ্ধি এল এমজিএমের কার্টুন বিভাগের প্রধান প্রযোজক ফ্রেড কুইম্বির মাথায়। আরে, এই বিড়াল-ইঁদুর জুটিকে নিয়ে একটা কার্টুন সিরিজ চালু করে দিলেই তো হয়! যেই ভাবা সেই কাজ। হান্না আর বারবারাকে, অন্য সব কার্টুন তৈরির কাজ থেকে ছাড়িয়ে, কেবল বিড়াল আর ইঁদুর নিয়ে একটি কার্টুন সিরিজ তৈরির কাজে লাগিয়ে দিলেন কুইম্বি।

টম আর জেরি নাম দুটো দিয়ে ৫০ ডলার পুরষ্কার জিতে নিলেন অ্যানিমেটর জন কার।

১৯৪১ সালে সিনেমা হলে প্রচার শুরু হলো টম অ্যান্ড জেরির। প্রথম পর্ব ‘দ্য মিডনাইট স্নেক’। পাস গেটস দা বুটের বিড়াল চরিত্র জেসপার হলো টম আর নামহীন ইঁদুরটি হলো জেরি।

পরের বছরগুলোতে টমের চেহারায় বেশ পরিবর্তন এলেও জেরি রয়ে গেল আগের মতোই। একের পর এক কার্টুন তৈরি হতে লাগল এই জুটিকে নিয়ে। প্রতিটি কাহিনীর মূল বিষয়, ইঁদুরকে তাড়া করছে বিড়াল। তবে এই সাধারণ বিষয়টিতেই অসাধারণ বৈচিত্র্য আনলেন হান্না আর বারবারা। টম অ্যান্ড জেরি পরিণত হলো এমজিএমের সবচেয়ে জনপ্রিয় কার্টুন সিরিজে। শুধু তা-ই নয়, সেরা কার্টুন হিসেবে জিতল সাতটি অস্কার।

পঞ্চাশের দশকের দিকে টম অ্যান্ড জেরির বাজেট কিছুটা ছেঁটে ফেলা হলো। তবে এতে সিনেমায় এর প্রবল জনপ্রিয়তায় তখনো ভাটা পড়েনি। এ সময়ই জনপ্রিয় হয়ে উঠে টেলিভিশন। যা লাগাম টেনে ধরে থিয়েটার বাণিজ্যে। টম অ্যান্ড জেরির পুরনো কার্টুনগুলোকে নতুনভাবে বাজারে ছেড়েই চোখ কপালে উঠল এমজিএমের। বাহ! এগুলো থেকে তো নতুন ছবির মতোই আয় হচ্ছে! অযথা আর টাকা খরচ করে নতুন ছবি বানিয়ে লাভ কী। একদিন সবাইকে চমকে দিয়ে তাদের কার্টুন বিভাগ বন্ধ করে দিল এমজিএম। বারবারা আর হান্নার শেষ কার্টুন টট ওয়াচারস মুক্তি পেল ১৯৫৮ সালের ১ আগস্ট। এটি ছিল তাদের তৈরি করা ১১৪তম টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন।

১৯৬০ সালের শেষে এসে মত পাল্টাল এমজিএম। টম অ্যান্ড জেরির নতুন পর্ব তৈরির দায়িত্ব পেলেন প্রযোজক উইলিয়াম এল. স্নাইডার আর অ্যানিমেশন পরিচালক জেন ডিচ। কিন্তু ডিচ আর স্নাইডার আগের টম অ্যান্ড জেরির খুব কম পর্বই দেখেছেন। তারপর আবার প্রতিটি পর্বের জন্য বাজেট মোটে ১০ হাজার ডলার। এতে তাঁদের তৈরি করা ছবিগুলো হলো অনেকাংশেই অস্বাভাবিক আর অদ্ভুত। এমনকি টমের নতুন মালিক মোটাসোটা সাদা লোকটাকেও পছন্দ করার মতো তেমন কোনো কারণ খুঁজে পেল না দর্শক। সব মিলিয়ে মোট ১৩টি পর্ব তৈরি করেন ডিচ। আর এগুলো তৈরি হলো প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে, চেকোস্লোভাকিয়ার প্রাগে।

ডিচের পর সিনেমার জন্য টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হলো চাক জোন্সকে। কিন্তু টম অ্যান্ড জেরির হাস্য-রসাত্দক স্বাভাবিক চরিত্রের সঙ্গে খাপ-খাওয়াতে গিয়ে বিপাকে পড়লেন ভদ্রলোক। টম আর জেরির চেহারায় কিছু পরিবর্তন আনলেন জোন্স। চেহারাটাকে আরো আক্রমণাত্দক করার জন্য টম পেল বরিস কারলফের চোখের পাতা। এই আমেরিকান তাঁর সময়ে ভৌতিক ছবিতে অভিনয় করে খুব নাম কুড়ান। আরেকটু মোটাসোটা হলো জোন্সের টম, কান দুটো হলো আগের চেয়ে খাড়া। জেরির চোখ দুটো আরো বড় আর উজ্জ্বল হলো। কান দুটোও বড় হলো, ভাব-ভঙ্গিতে কোমলতা এল। আগের টম অ্যান্ড জেরির চেয়ে নতুন কার্টুন ছবিগুলো খুব একটা আলাদা হলো না, কাহিনীও জোরদার হচ্ছিল না। এভাবে ৩৪টি কার্টুন তৈরি করার পর ১৯৬৭ সালে আবারও টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন তৈরির কাজ বন্ধ করে দিল এমজিএম। সিনেমায় এর কোনো ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছিলেন না তাঁরা। টম অ্যান্ড জেরির জায়গা হলো স্টুডিওর লাইব্রেরির ধূলি-ধূসরিত আর্কাইভে।

আস্তে আস্তে টেলিভিশন জনপ্রিয় হয়ে উঠল। ১৯৬৫ সালের গোড়ার দিকে হান্না আর বারবারার তৈরি কার্টুনগুলো টেলিভিশনে প্রচার শুরু হলো, তবে বেশ কিছু অদল-বদল করে। সিবিএস চ্যানেলে প্রচারিত হলো ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

১৯৮৬ সালের দিকে টেড টার্নার নামের ভদ্রলোক কিনে নিলেন এমজিএম। পরবর্তী বছরগুলোকে টার্নারের পরিচালিত বিভিন্ন স্টেশন যেমন_ টিবিএস, টিএনটি, কার্টুন নেটওয়ার্ক, টার্নার কাসিক মুভিজে দেখা দিতে লাগল টম অ্যান্ড জেরি। টম অ্যান্ড জেরির এখনকার মালিক আমেরিকান চলচ্চিত্র এবং টিভি অনুষ্ঠান প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্নার ব্রাদার্স।

ইংল্যান্ডের বিভিন্ন চ্যানেলে টম অ্যান্ড জেরির প্রচার শুরু হয় সেই ১৯৬৭-তে। কার্টুন ছবিগুলোয় সংলাপের সংখ্যা কম হওয়ায় মস্ত বড় একটা সুবিধা হলো, বিভিন্ন বিদেশি ভাষায় অনুবাদ করে খুব সহজেই দেখানো যায়। জাপানে এর প্রচার শুরু হয় ১৯৬৪ সালে। জার্মানিতেও বহু আগে থেকেই জনপ্রিয় এই সিরিজ। আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, ব্রাজিলসহ দণি আমেরিকার বিভিন্ন দেশ, দণি-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে এখনো কার্টুন নেটওয়ার্ক নিয়মিত প্রচার করছে টম অ্যান্ড জেরি।

১৯৭৫ সালে আবারও পুরনো বন্ধু টম ও জেরিকে নিয়ে কাজ করার সুযোগ মিলল হান্না আর বারবারার। টেলিভিশনের জন্য নতুন করে তৈরি শুরু করেন তাঁরা। সাত মিনিটের ছোট্ট ৪৮টি কার্টুন দেখানো হতে লাগল ‘দি গ্রেট গ্রেইপ এইপ’ আর ‘মাম্বলি’ কার্টুনের সঙ্গে জোড়া বেঁধে। প্রচার হলো কার্টুন নেটওয়ার্ক চ্যানেলে ১৯৭৫-এর সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭৭-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। টেলিভিশনে থিয়েটারে প্রচারিত পর্বগুলো দেখানোর কয়েক বছর বাদে এগুলোই ছিল প্রথম নতুন টম অ্যান্ড জেরির সম্প্রচার। তবে এই পর্বগুলোতে টম ও জেরিকে দেখা গেল তাদের ঝগড়াঝাঁটি ভুলে গিয়ে, একত্রে বিভিন্ন অভিযানে বের হতে।

২০০০ সালে, ‘টম অ্যান্ড জেরি: দি মেনসন ক্যাট’ নামে নতুন একটি কার্টুন প্রচার হলো কার্টুন নেটওয়ার্কে। এই কার্টুনে জেরিকে অনেকটাই বাড়ির পোষা ইঁদুরের মতো দেখানো হলো। এতে তাদের মালিক (যার চেহারা কখনো দেখা যায়নি) সব দোষ ইঁদুরটার ঘাড়ে না চাপানোর জন্য টমকে সাবধান করে দেয়।

২০০৬ সালে ‘টম অ্যান্ড জেরি টেলস’ নামে নতুন একটি ধারাবাহিক সম্প্রচার শুরু করে ওয়ার্নার ব্রাদার্স। আধঘণ্টার ১৩টি পর্ব শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র আর যুক্তরাজ্যের বাইরে প্রচার শুরু হলেও পরে এই দুটি দেশের দর্শকরাও এর স্বাদ পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলো না। কমিক বইগুলোতে এদের প্রথম দেখা যায় ১৯৪২ সালে। তার পর থেকে এ ধরনের বইয়ের নিয়মিত চরিত্রে পরিণত হয় এই জুটি। বহু ভিডিও গেমেও উপস্থিত হতে দেখা যায় এদের। বলা চলে, কার্টুনের গণ্ডি পেরিয়ে বিনোদ জগতের প্রায় প্রতিটি েেত্রই প্রভাব বিস্তার করেছে টম ও জেরি। তবে এত কিছুর পরও এই জনপ্রিয় জুটিকে অমরত্বের ঠিকানায় পৌঁছে দিয়েছে নিঃসন্দেহে টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন।

 

অন্যান্য চরিত্রসমুহ:

জেরিকে ধরতে কখনো কখনো টমকে অনাকাঙ্খিত চরিত্রের সাহায্য নিতে হয়। এমনি এক চরিত্র হল বাচ। বাচ হল গলিতে থাকা কালো রঙের নোংরা এক বিড়াল যে নিজেও জেরিকে ধরে খেতে চায়। আরও কিছু চরিত্র হল স্পাইক (কখনো কিলার অথবা বাচ হিসেবে ঘোষিত), রাগী ভয়ংকর দারোয়ান বুলডগ যে বিড়ালদের পিটাতে পছন্দ করে এবং ম্যামী-টু-শুস্, একজন আফ্রিকান আমেরিকান চরিত্র (লিলিয়ান রানডলৃফের কন্ঠে)যার চেহারা কখনো দেখা না গেলেও দোষ্টুমি করলে টমের কপালে তার ঝাটাপেটা ঠিকই জোটে। এক পর্বে লাইটনিং নামের এক দ্রুত গতির বিড়াল থাকে যে খুব সাবলীলভাবেই জেরিকে ধরে ফেলে এবং ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে খায়। পরে জোট বেঁধে টম ও জেরি ওকে বের করে দেয়। 

ঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে, জেরি একটি ধূসর রঙের ছোট ইঁদুর দত্তক নেয় যার প্রথম নাম ছিল নিবলৃস (পরর্তীতে টাফি এবং কারও মতে টেরি)। নিবলৃস কথা বলতে পারে তবে সাধারণত বিদেশী ভাষায় যাতে করে পর্বের থিম এবং পারিপাশ্বিকতার সাথে সামঞ্জস্য থাকে। ১৯৫০ জুড়ে দেখানো হয় যে স্পাইকের একটি সনতান আছে যার নাম টাইক। এই সংযুক্তি স্পাইকের চরিত্র কোমলতা যোগ করে এবং তাদের নিয়ে একটি সমসাময়িক স্বল্পস্থায়ী সিরিজ স্পাইক এন্ড টাইক চালু হয়। টাইকের উপস্থিতিকে জেরি টমের বিরুদ্ধে আরেকটি

হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। কেননা টাইককে যে বিরক্ত করবে স্পাইকের খড়্গ তার উপরেই নেমে আসবে আর এক্ষেত্রে টমকেই বেশী দেখা যায়।

 

নিবলস, ছোট্ট ইঁদুর, যার নাম পরে বদলে টাফি রাখা হয়।

স্পাইক কদাচিৎ কথা বলে । ওর কথা বলা আর মুখভঙ্গি জিমি ডুরান্ট এর আদলে করা যেমন “ড্যাটস মাই বয়!”। আরেকটি নিয়মিত চরিত্র হল হাসের ছানা কোয়াকার, যাকে পরে হ্যানা বারবারার ইয়াকি ডুডল নেয়া হয়। কোয়াকার আটটি পর্ব করে যার প্রথমটি ছিল ১৯৫০ এর সময় যা টম এন্ড জেরির প্রথম শট। আরেকটি এভিয়ান চরিত্র হল ছোট হলদে পাখি যার প্রথম উপস্থিতি ছিল ১৯৪৭ এর কিটি ফয়েলড এ যা কোয়াকার এর প্রাক্তন রুপ।জেরির অনেক আত্মীয়ও রয়েছে যাদের কেবল একটি পর্বেই দেখা যায়। এদের মধ্যে জেরির কাজিন মাসলস (জেরিস কাসিন,১৯৫১) এবং জেরির মামা পেকোস (পেকোস পেস্ট,১৯৫৫)।

You can leave a response, or trackback from your own site.