আসছে কিউডির যুগ । - প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light | প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light

আসছে কিউডির যুগ ।

Print this post

টেলিভিশনের প্রযুক্তিকে পাল্টে দিচ্ছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকরা। গবেষকরা বলছেন,

থ্রিডি প্রযুক্তির যুগও শেষ হতে চলেছে। কারণ, তারা ‘কিউডি টিভি’ উদ্ভাবনে সফল

হয়েছেন ।

ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা এমন একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন

করেছেন যার ফলে টেলিভিশন স্ক্রিনকে ভাঁজ করা যাবে। এমনকি রোল করে পকেটে পুরে যে

কোনো স্থানে টিভি দেখার ব্যবস্থা করা যাবে। আর এ স্ক্রিন তৈরির প্রযুক্তিটির নাম

‘কোয়ান্টাম ডটস’ বা সংক্ষেপে ‘কিউডি’।

গবেষকরা জানিয়েছেন, কোয়ান্টাম ডটস হচ্ছে লাইট-এমিটিং ক্রিস্টালের নতুন রূপ যা খুবই

পাতলা টিভি স্ক্রিন তৈরিতে ব্যবহার করা সম্ভব। ক্ষুদে এ ক্রিস্টাল চওড়ার দিক থেকে

মানুষের চুলের অনুপাতে ১ লাখ ভাগের এক ভাগ। এ ক্রিস্টালকে নমনীয় প্লাস্টিক পাতের

ওপর প্রিন্ট করে সহজেই পাতলা স্ক্রিন বানানো সম্ভব। থ্রিডি প্রিন্টারে তা বিভিন্ন আকারও

দেয়া যায়। বিশালাকার পর্দা তৈরি করে তা বিশাল হলটিভিও তৈরি করা সম্ভব।

গবেষকরা জানিয়েছেন, নতুন এ টেলিভিশন ডিসপ্লে বর্তমানে বাজারে থাকা ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভির

চেয়েও  উন্নত ছবি দেখাবে।

২০১২ সালের শেষ নাগাদ ফ্ল্যাট টিভির আদলে তৈরি কিউডি টিভির  মডেল বাজারে চলে

আসবে। তবে নমনীয় বা ভাঁজ করা যায় এমন পর্দাযুক্ত মডেলের টিভি বাজারে আসতে আরো

বছর তিনেক দেরী হতে পারে বলেই গবেষকরা জানিয়েছেন। নতুন প্রযুক্তির টিভি তৈরি করছে

যুক্তরাজ্যের ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ন্যানোকো।

ন্যানোকো-এর চিফ এক্সিকিউটিভ মাইকেল এডলম্যান জানিয়েছেন,

‘আমরা এশিয়ার কয়েকটি প্রধান ইলেকট্রনিক কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছি। কোয়ান্টাম ডট প্রযুক্তির

প্রথম ব্যাচের টেলিভিশন হবে পরবর্তী প্রজন্মের ফ্ল্যাট স্ক্রিন টেলিভিশন’।

মাইকেল এডলম্যান আরো জানিয়েছেন, ‘কোয়ান্টাম ডট টেলিভিশনের প্রধান সুবিধা হচ্ছে, এটি প্লাস্টিক পাতের

ওপর প্রিন্ট করা পর্দা যা সহজেই ভাঁজ করে রাখা যাবে। ব্যক্তিগত ডিভাইস হিসেবেই এখন টিভি সবার পকেটে ঢুকবে

এবং অন্যান্য অন্যান্য খুদে ডিভাইসের মতো টিভিও সঙ্গে করে বয়ে নেয়া সম্ভব হবে।’

‘আমরা ওয়ালপেপার বা পর্দার মতো কোনো টেলিভিশন তৈরির উপায় খুঁজছিলাম যাতে কোয়ান্টাম ডট প্রিন্ট করা থাকে।

এখন ঠিক ওয়ালপেপার বা পর্দার মতো দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা যাবে এ টেলিভিশন।’

ন্যানোকো কিউডি টিভি বিপননের জন্য এশিয়ার কোন কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছেন সে তথ্য ফাঁস করতে চাননি

এডলম্যান। তবে, বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ইলেকট্রনিক জায়ান্ট সনি, শার্প, স্যামসাং এবং এলজি ন্যানোকোর কিউডি টেলিভিশন

বাজারে আনতে পারে।’

গবেষকরা বলছেন, বর্তমানে বাজারে থাকা টেলিভিশনগুলোর অধিকাংশই লিকুইড-ক্রিস্টাল ডিসপ্লে (এলসিডি) প্রযুক্তির যেখানে লাইট এমিটিং

ডায়োড (এলইডি) ব্যবহৃত হয় আর তাতে স্ক্রিনের পুরুত্ব দাঁড়ায় ২ থেকে ৩ ইঞ্চির কাছাকাছি। তবে, এলইডি’র বদলে কোয়ান্টাম ডট ব্যবহার করলে

টিভির পুরুত্ব একেবারেই কমে যাবে।

কোয়ান্টাম ডট তৈরি করতে দুস্পাপ্য উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে বলেই গবেষকরা জানিয়েছেন। ফলে টিভি তৈরির খরচও বেড়ে গেছে।

তবে, নতুন উপাদান ব্যবহার করে কোয়ান্টাম ডট তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছেন গবেষকরা।  বর্তমানে কোয়ান্টাম ডট তৈরি সহজলভ্য সেমি-কন্ডাক্টিং 

উপাদান ব্যবহার করেছেন গবেষকরা যাতে বিদ্যুৎ বা অতিবেগুনি রশ্মি নির্গত হয়। এই ক্রিস্টালের  আকার পরিবর্তন করে পর্দায় আলোর রং পরিবর্তন

করা সম্ভব।

প্রাকৃতিক রংয়ের আলো তৈরি করা সম্ভব কিউডি প্রযুক্তিতে। আর তাই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক বাতিও তৈরি করার পরিকল্পনা

করেছে ন্যানোকো। এ ছাড়াও কোয়ান্টাম ডট প্রযুক্তি ব্যবহার করে সৌরশক্তিচালিত ডিসপ্লে তৈরি করার কথাও জানিয়েছে ন্যানোকো।

ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টার-এর গবেষক পল ও’ব্রায়েন জানিয়েছেন, ‘ক্রিস্টালের আকার পরিবর্তন করে আমরা আলোর রং পরিবর্তন

করতে পেরেছি। এ বিষয়টি এমন যে, টেবিলের ওপর পেনসিলের আঘাতে যেমন শব্দ পরিবর্তিত হয় কোয়ান্টাম ডটে আলোর ক্ষেত্রেও রং এভাবেই

পরিবর্তন ঘটে। কম শক্তি খরচ করেই যথেষ্ট ভালো কালার দেখায় এ টিভি।’ খবর টেলিগ্রাফ অনলাইন-এর।

-তথ্য সূত্র ,বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম । 

 

You can leave a response, or trackback from your own site.