অ্যান্টিবায়োটিক কি ? জানুন.... - প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light | প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light

অ্যান্টিবায়োটিক কি ? জানুন….

Print this post

এটা অনেক প্রকার জৈব-রাসায়নিক ঔষধ । যা রোগ ধংশ করাতে সাহায্য করে খাকে । এক এক অ্যান্টিবায়োটিক এক এক ধরণের অণুজীব তৈরি করে ও অন্যান্য অণুজীবের বিরুদ্ধে কাজ করে। অ্যান্টিবায়োটিক সাধারণভাবে ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে । প্রাকৃতিক উপাদানের যে রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা আছে, তা আন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের বহু পূর্বে মানুষের জানা ছিল। শতবর্ষ পূর্বে চীনে সয়াবিনের ছত্রাক(Mould) আক্রান্ত ছানা (Moldy Soybean Curd) বিভিন্ন ফোঁড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হত। চীনারা পায়ের ক্ষত সারাবার জন্য ছত্রাক Mould আবৃত পাদুকা (স্যান্ডল) পরত। ১৮৮১ সালে ব্রিটিশ অণুজীব বিজ্ঞানী জন টিন্ডাল (John Tyndall) ছত্রাকের জীবাণু প্রতিরোধী ভূমিকা লক্ষ্য করেন।

লুই পাস্তুর এবং জোবার্ট লক্ষ্য করেণ কিছু অণুজীবের উপস্থিতিতে প্রস্রাবে আন্থ্রাক্স ব্যাসিলি (Anthrax) জন্মাতে পারেনা। ১৯০১ সালে এমারিখ (Emmerich) এবং লও (Low) দেখেন যে আন্থ্রাক্স ব্যাসিলি ( Anthrax bacili) আক্রমণ থেকে খরগোশকে বাঁচানো সম্ভব যদি সিউডোমোনাস এরুজিনোসা Pseudomonas aeruginosa নামক ব্যাক্টেরিয়ার তরল আবাদ (Liquid culture) খরগোশের দেহে প্রবেশ (Inject) করানো যায়। তাঁরা মনে করেণ ব্যাক্টেরিয়াটি কোনো উৎসেচক (enzyme)তৈরি করেছে যা জীবাণুর আক্রমণ থেকে খরগোশকে রক্ষা করছে। তাঁরা এই পদার্থের নাম দেন পাইওসায়ানেজ (Pyocyanase)। ১৯২০ সালে গার্থা ও দাথ কিছু গবেষণা করেন এই জাতীয় জীবাণু নাশক তৈরি করতে। তাঁরা অ্যাকটিনোমাইসিটিস (Actinomycetes) দ্বারা প্রস্তুত একধরনের রাসায়নিক পদার্থ খুজে পান যার জীবাণুনাশী ক্ষমতা আছে। তাঁরা এর নাম দেন অ্যাকটিনোমাইসিন। কিন্তু কোনো রোগের প্রতিরোধে এই পদার্থ পরবর্তিতে ব্যবহৃত হয় নাই। এই জাতীয় আবিস্কারের পরও ১৯২৯ সালের আগে অ্যান্টিবায়োটিক এর যুগ শুরু হয় নাই। ১৯২৭ সালে স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (Alexander Fleming) প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক পেনিসিলিন আবিষ্কার করেন।

রথম আন্টিবায়োটিক ১৯২৭ লন্ডনের সেন্ট মেরি হাসপাতালে কর্মরত অণুজীব বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্লেমিং আবিষ্কার করেণ। ফ্লেমিং তার এক পরীক্ষার (Experiment) সময় লক্ষ্য করেণ জমাট আবাদ মাধ্যমে (Solid culture medium) ছত্রাকের উপস্থিতিতে স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস Staphylococcus aureus নামক ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে পারেনা। আবাদ মাধ্যমে ছত্রাকের উপস্থিতি কাম্য ছিল না, আসলে পরীক্ষাকালীন কোনো অজানা ত্রুটির কারণে ছত্রাক আবাদ মাধ্যমে চলে এসে ছিল। ফ্লেমিং তখন ঐ ছত্রাকের প্রজাতি চিহ্নিত করতে ও তার জীবাণু নাশক বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করতের আগ্রহী হন। ছত্রাকটি ছিল পেনিসিলিয়াম (এখন জানা গেছে পেনিসিলিয়াম ক্রাইসোজেনাম Penicillium chrysogenum প্রজাতির)। ফলে ফ্লেমিং পেনিসিলিয়াম দ্বারা নিসৃত ঐ পদার্থের নাম দেন পেনিসিলিন (Penicillin)। পেনিসিলিয়াম একা নয়, অন্য আর এক প্রকার ছত্রাক প্রজাতি যেমন অ্যাস্পারজিলাস-ও (Aspergillus) পেনিসিলিন তৈরি করতে পারে।

রাসায়নিক গঠনের উপর ভিত্তি করে আন্টিবায়োটিককে নানা ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভাগ গুলো হল [৮],
বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয় (beta-lactum)
পেনিসিলিন জাতীয়
সেফালোস্পোরিন জাতীয়
প্রথম শ্রেণীর সেফালোস্পোরিন
দ্বিতীয় শ্রেণীর সেফালোস্পোরিন
তৃতীয় শ্রেণীর সেফালোস্পোরিন
কার্বাপেনেম জাতীয়
ইমিপেনেম
মেরোপেনেম, ইত্যাদি
মোনোব্যাক্টাম জাতীয়
অ্যাজট্রিওনাম
সালফোনামইড জাতীয়
ক্লোরাম্ফেনিকল জাতীয়
ক্লোরাম্ফেনিকল,
থিয়াম্ফেনিকল,
আজিডাম্ফেনিকল, ইত্যাদি
কুইনোলোন জাতীয়
ন্যালিডিক্সিক অ্যাসিড
ফ্লুরোকুইনোলোন জাতীয়
নরফ্লক্সাসিন
সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইত্যাদি
ম্যাক্রোলাইড জাতীয় (Macrolides),
এরিথ্রোমাইসিন,
অ্যাজিথ্রোমাইসিন,
স্পাইরামাইসিন
ক্লারিথ্রোমাইসিন, ইত্যাদি
অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড জাতীয় (Aminoglycosides),
স্ট্রেপ্টোমাইসিন,
জেন্টামাইসিন,
সিসোমাইসিন,
টোব্রামাইসিন, ইত্যাদি
টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় (Tetracyclin)
টেট্রাসাইক্লিন,
ডক্সিসাইক্লিন,
মিনোসাইক্লিন, ইত্যাদি
পলিপেপটাইড জাতীয়(Polypeptide)
পলিমিক্সিন বি, পলিমিক্সিন ই,
ব্যাসিট্রাসিন,
ক্যাপ্রিয়োমাইসিন,
ভ্যাঙ্কোমাইসিন, ইত্যাদি
পলিয়িন জাতীয়
অ্যাম্ফোটেরিসিন বি,
নাইস্টাটিন ইত্যাদি
ইমাইডাজোল
ফ্লুকোনাজোল,
ইট্রাকোনাজোল, ইত্যাদি
বেঞ্জোফুরান জাতীয়
গ্রিসোফুল্ভিন ইত্যাদি
আন্সামাইসিন জাতীয়
রিফামাইসিন ইত্যাদি
লিনোসামাইড জাতীয়
ক্লিন্ডামাইসিন,
লিঙ্কোমাইসিন, ইত্যাদি

You can leave a response, or trackback from your own site.