অনেক বিজ্ঞানী বা গবেষকইবিশ্বাস করেন সুপারন্যাচারাল বা অতিপ্রাকৃতিক বিষয়সমূহে। অন্যদিকে অনেক বিজ্ঞানী একে স্রেফঅবিশ্বাস করেন। এর কারণ হতে পারে এই যে, সুপারন্যাচারালের অস্তিত্বের প্রমাণগুলো চাক্ষুস নয়। দেখা যায়, এসব ঘটনা খুব অল্পসংখ্যকমানুষের জীবনেই ঘটে। তবেআমার কথা হচ্ছে, ভৌতিক কিছু না ঘটলেও কিছু কিছুজায়গা কিন্তু আমাদের মনেভীতির সৃষ্টি করে। যেমন গভীর রাতে কোনো ঝোপ-ঝাড়ে, জঙ্গলে, কিংবা বহু বছর ধরে পরিত্যক্ত কোনো বাড়িতে ঢুকতে গেলে স্বভাবতঃই আমরা ভয় পাবো।কিছু না ঘটলেও আমাদের মনে ভয়-ভীতি কাজ করবেই। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন?
আমি নিজেকে কখনো জিজ্ঞেসকরিনি আমি কেন ভয় পাই। বরং “ভয়” নিয়ে চিন্তা করার সময় হঠাৎই জবাব পেয়ে গেছি কেন আমরা ভয় পাই। আমরা ভয় পাই এর আসল কারণ হচ্ছে আমাদের মধ্যেভয় ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
আমার মতে, ভয় হচ্ছে ভাইরাসের মতো। এটি ছোঁয়াচে। খুব শক্তিশালী মনের অধিকারী না হলে যে কারো মধ্যেই যে কোনো স্থান (পুকুর, বাড়ি কিংবা কোনো আস্তানা) সম্পর্কে ভৌতিক কাহিনী শুনিয়ে ভয় ঢুকিয়ে দেয়া সম্ভব। তাৎক্ষণিকভাবে তার মধ্যে ভীতি সঞ্চার হওয়ারকোনো প্রমাণ না পাওয়া গেলেও সেই ব্যক্তিটির মনের মধ্যে কোথাও না কোথাও ভয়টা লুকিয়ে থাকবেই, যেটা সময়মতো আক্রমণ করে মনকে কাবু করে দিবে; তথা ভয় ধরিয়ে দেবে।
উদাহরণ দিচ্ছি, ধরুন আমরা বেশিরভাগ মানুষই অন্ধকারকে ভয় পাই। পুরনোবাড়ি, কবরস্থান, বাঁশ-ঝাড় ইত্যাদি আমাদের অনেকের মনেই ভয়েরসৃষ্টি করে। প্রশ্ন হচ্ছে কেন? আমার মতে, এর কারণ আমরা ছোটবেলা থেকে এ পর্যন্ত অনেক ভাবে জেনে এসেছি যে এসব জায়গাভূতের আস্তানা হয়। হতে পারে সেটা কোনো গল্প বা মুভি যা আমাদের মধ্যে ভয়নামক ভাইরাসটি ঢুকিয়ে দিয়েছে। ভেবে দেখুন, একটা মানুষ যদি ছোটবেলা থেকে কখনোই এ জাতীয় গল্পবা মুভি না দেখে, তাহলে কি সে একটা পরিত্যক্ত বাড়িতে রাতের অন্ধকারে যেতে ভয় পাবে? আমার মনে হয় না সে ভয় পাবে।
উইকিপিডিয়া ঘেঁটে দেখলাম ভয়ের কারণ হিসেবেবলা হয়েছে, People develop specific fears as a result of learning. অর্থাৎ, মানুষভয় পেতে শিখে। সাঁতার নাজেনে পানিতে পড়লে পানি সম্পর্কে একটা ভয় সৃষ্টিহবেই। কিন্তু ভৌতিক বিষয়ে ভীতিটা একটু অন্যরকম। এটা কেবল গল্প বা ছবির মাধ্যমে জানলেই যথেষ্ট। নিজে ভূতের সামনে পড়া লাগে না। এভাবেই আমরা সাহিত্য বা সংস্কৃতির মাধ্যমে ভয় পেতে শিখে এসেছি।
অতএব, আপনি ভয় পান কারণ আপনি ভয় পেতে শিখেছেন। আপনি হয়তো নিজের ইচ্ছেয় শিখেন নি, কিন্তু আপনাকে বিভিন্ন গল্প ও ছবির মাধ্যমে শিখানো হয়েছে। আর এ জন্যই ভয় নামক অনুভূতিটি আপনার মধ্যে কাজ করে।
অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা সম্পর্কে আরও জানতে ডিসকভারির এ হন্টিং দেখতে পারেন যেখানে বাস্তব ঘটনাকে রিকন্সট্রাকশন করে দেখানো হয়। ডিসকভারি বাংলায় সম্প্রচারিত হয় বলে অনেকেই দেখে ঘটনা বুঝতে পারবেন। তবে রাতে দেখা থেকে বিরত থাকবেন (যদিও প্রোগ্রামটি রাতেই দেখায়, পুনঃপ্রচারহয় দুপুরের দিকে)।