মিশরের প্রাচীন এক রাজবংশে জন্ম নিল একটি ছেলে সন্তান “হারমাচিস” - প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light | প্রযুক্তির আলোয় * আলোকিত জগৎ | The whole technology of light

মিশরের প্রাচীন এক রাজবংশে জন্ম নিল একটি ছেলে সন্তান “হারমাচিস”

Print this post

মিশরের প্রাচীন এক রাজবংশে জন্ম নিল একটি ছেলে সন্তান “হারমাচিস”। তার মা স্বপ্ন দেখলেন একদিন তার ছেলে মিশরের রাজা হবেন, যেমন তার পূর্বপুরুষরা ছিলেন। যেদিন হারমাচিসের জন্ম হলো সেদিনই, তখনকার রাজার ঘরে জন্মনিলো এক শিশুকন্যা “ক্লিওপেট্রা”।

হারমাচিসের মা তার স্বপ্নের কথা জানিয়ে দিল হারমাচিসের বুড়ি দাইমার কাছে। এক’কান দু’কান কেরে এই কথা পৌছোগেল রাজার কানে। রাজা কথাটা শোনা মাত্রই সৈন্য পাঠালো ছেলেটাকে মারা জন্য। সৈন্যরা যখন হারমাচিসকে মারতে এলো তখন বুড়িদাইমা তার নিজের নাতিকে হারমাচিস বলে চিনিয়েদিলেন সৈন্যদের। সৈন্যরা বুড়ির নাতীর মাথা কেঁটে নিয়েগেল রাজাকে দেখাতে। এভাবেই বেঁচে গেলো হারমাচিস। রাজাও কাটা মাথা দেখে ভুলেগেলেন সব।

 

হারমাচিস একটুবড় হবার পর একদিন তার বাবার কাছে জানতে পারলো তার মার দেখা স্বপ্নের কথা, একদিন মিশরের রাজা হবে সে। তাই তার বাবা যেকিনা প্রধান পুরহিত, ছেলে হারমাচিসকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য হারমাচিসএর মামার নিকটে পাঠিয়ে দিলেন। পাঁচ বছর একমাস মামার কাছে থেকে নানান ধরনের শিক্ষা ও জাদুবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ওঠে হারমাচিস। বাবার কাছে ফিরে এলে বাবা তাকে এবার দেবতাদের বিষয়ে অজানা ধ্যানসাধনার কথা বলেন। এর কিছুদিন পরেই হারমাচিস প্রধান পুরুহিত হিসেবে দিখ্যা নেন, এবং একটি গোপন মিটিংএ মিশরের বিভিন্ন পুরহিত ও প্রধান প্রধান ব্যক্তিবর্গ হারমাচিসকে মিশরের ফারাও বা রাজা হিসেবেও মননিত করেন।

 

ইতোমধ্যে রাজার মৃত্যুর পরে তার কন্যা ক্লিওপেট্রা মিশরের রাণী হয়ে সিংহাসনে বসে। তাই হারমাচিসের উপরে দায়ীত্ব পরে, ক্লিওপেট্রাকে হত্যা করার। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয় বিদ্রহ ও হত্যার মাধ্যমে হারমাচিসের রাজা হবার। রাণী ক্লিওপেট্রার খাস দাসী চারমিওন ছিলো হারমাচিসেরই চাচাতো বোন। চারমিওনের সাহায্যে হারমাচিস রাণীর নেকনজরে আসে এবং রাণীর খাস জ্যতীসি হিসেবে নিযুক্ত হয়। রাণী হারমাচিসের রূপ দেখে তাকে ভালো বেসে ফেলে, আবার হারমাচিসও নিজের কর্তব্যের কথা ভুলে যায় ক্লিওপেট্রার রূপ দেখে। ক্লিওপেট্রার ছিলো মিশরের সেরা সুন্দরী।

 

হারমাচিস আর রাণী ক্লিওপেট্রা ভালোবেসে ফেলে একে-অপরকে। কিন্তু হারমাচিসকে সকলেই বারবার মনে করিয়ে দিতে থাকে তার কর্তব্যের কথা। একদিন হারমাচিস ও চারমিওন মিলে ঠিককরে রাণীকে ছুরিমেরে হত্যা করবে হারমাচিস। সেই মোতাবেক হারমাচিস যায় রাণীর কক্ষে, কিন্তু চারমিওনের বিশ্বাস ঘাতকতাকার কারণে ধরা পরে যায় হারমাচিস। তারপর শুরু হয় তার নতুন আরেক উপলব্ধি।

 

শেষপর্যন্ত হারমাচিস কি পেরে ছিলো ক্লিওপেট্রাকে হত্যা করতে……

 

রাজা হয়েছিলো হারমাচিস……..

 

চারমিওন কেন বিশ্বাস ঘাতকতা করেছিলো……..

 

[অনেক দিন আগে পড়েছিলাম হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের ক্লিওপেট্রা বইটির বাংলা অনুবাদ। সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশীত বইটির অনুবাদক সায়েম সোলায়মান। অনুবাদক চমৎকার অনুবাদ করেছেন স্বাবলীল শব্দচয়নে।]

 

বইটি পড়ুন উত্তর জানতে চাইলে।

 

ক্লিওপেট্রা বইটি থেকে কিছু উক্তি এখানে উল্লেখ করছি, যা আমার ভালো লেগেছে।

 

১/ নারীর জিভ ছাড়া পৃথিবীর আর সব কিছুকেই বোধহয় বেঁধে রাখা সম্ভব।

 

২/ কেবলমাত্র বোকা আর মূর্খরাই গোপন কথা বলে দেয়। জ্ঞানী আর সাহসীরা চুপ থাকে, উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করে।

 

৩/ সৌন্দর্যের দংশনে বিষধর সাপে কাটা মৃত মানুষের মতো স্থির হয়ে গেলাম আমি।

 

৪/ ফলের পোকার মতো কাজ করতে হবে আমাদের। যে পোকা ভেতর থেকে খেয়ে ফেলে ফলকে, কিন্তু বাইরে থেকে বুঝা যায়না ব্যাপারটা।

 

৫/ কোনো মেয়ে যদি তোমাকে ভালো না বাসে বা অন্ততপক্ষে পছন্দ না করে, তাহলে ওকে বিশ্বাস কোরো না। ওদের মতিগতির কোনো ঠিক নেই-ওদের আবেগ সমুদ্রের ঝড়ের মতো। কখন আসে, কখন যায়, টের পাওয়া যায় না।

 

৬/ তাড়াহুড়ো কতরে গিয়ে ভুল লোককে বেছে নেবেন না দয়া করে।

 

৭/ নর-নারীর ভালোবাসার ব্যাপারটা খুবই অদ্ভুত। ওই আবেগ শুরু হয় পাহাড়ের বুকে জন্ম নেওয়া ঝরনার মতো-ছোট্ট একটা জলধারা, যাকে গুরুত্বই দেয় না কেউ। আর শেষ হয় বিরাট কেনে নদীর মোহনায়, অথবা হয়তো কারও ক্ষেত্রে সমুদ্রে। সাঁতার না জানলে ডুবে মরা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না প্রেমিকের।

 

৮/ আমার মতে ভালোবাসা হচ্ছে আশার সমাধি, বিশ্বাসের ধ্বংসস্তূপ।

 

৯/ যতদিন আঘান না আসে, ততদিন প্রেম খুবই মধুর।

 

১০/ সুখ কি, তা না জেনেই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।

 

১১/ সময়ের চেয় বড় চিকৎসক আর নে্ই। মনের ঘা, শরীরের ঘা দুটোই একসময় শুকিয়ে দেয় সে।

 

১২/ যতটুকু পাই, ঠিক ততটুকুই চাই; আবার যতটুকু চাই, ঠিক ততটুকুই পাই।

 

১৩/ ভাগ্যকে দোষ দিয়ে আমরা পাপীরা নিজেদেরকে হালকা করতে চাই। অথচ একই পাপ আরেকজন করলে ওকে অপবাদ দিতে, সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে বাধে না আমাদের। ভাগ্যে লেখা ছিলো- বলে ক্ষমা করে দেই না লোকটাকে।

 

১৪/ পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত আবেগের নাম প্রেম এবং একমাত্র কোকারাই সেই আবেগে আক্রান্ত হয়।

 

১৫/ অকাজে বীরত্ব অপচয় করার চেয়ে আর বড় অপচয় নেই এই পৃথিবীতে 

You can leave a response, or trackback from your own site.